বিয়ের জন্য স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য কত হওয়া উচিত
বিয়ের জন্য স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য কেমন হওয়া উচিত, এটি একটি বহুপ্রাচীন ও চর্চিত প্রশ্ন। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। বয়সের পার্থক্য সম্পর্কে সাধারণত ধারণা হলো, পুরুষের বয়স কিছুটা বেশি হলে সম্পর্কের স্থায়িত্ব ও মানসিক ভারসাম্য ভালো থাকে।
বিজ্ঞানীদের মতে, বয়সের পার্থক্য বেশি থাকলে দাম্পত্য জীবনে অভিজ্ঞতা এবং পরিণত মনের কারণে পুরুষরা বেশি দায়িত্বশীল হতে পারে। বয়সের পার্থক্য চার থেকে সাত বছরের মধ্যে হলে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরস্পরকে বোঝাপড়ায় সুবিধা হয়। আবার ছোট বয়সের পার্থক্য থাকলেও সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকে। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের বয়স প্রায় কাছাকাছি হলে তাদের মানসিকতা, চিন্তাধারা এবং শখ প্রায় একরকম হতে পারে, যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক হতে পারে।
আবার সমাজে এমন দৃষ্টিভঙ্গিও রয়েছে, যেখানে স্ত্রীর বয়স স্বামীর চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও সম্পর্ক ভালো হতে পারে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এর ফলে দাম্পত্য জীবনে কিছুটা ভারসাম্য বজায় থাকে, কারণ নারীরা সাধারণত পুরুষদের চেয়ে মানসিকভাবে বেশি পরিপক্ক হয়।
তবে বয়সের পার্থক্য আসলে সম্পর্কের স্থায়িত্বের একমাত্র শর্ত নয়। বরং সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরস্পরের প্রতি সম্মান, বোঝাপড়া, এবং একে অপরকে মানসিকভাবে সহায়তা করা। ভালো সম্পর্কের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং পরস্পরের প্রতি আস্থা গুরুত্বপূর্ণ।
সব মিলিয়ে, বয়সের পার্থক্য কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সম্পর্কের সাফল্য নির্ভর করে দুইজনের বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর।
৫-৭ বছরের ব্যবধান : বয়সের এমন ব্যবধান থাকলে দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া, বিবাদ,ভুল বোঝাবুঝি কম হয়। দুজনের মধ্যে একজন যদি পরিণত বয়সের হয় তবে সে সম্পর্ককে অটুটভাবে ধরে রাখে। বয়সের এই ব্যবধানকে বিয়ের জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়। কারণ এতে করে একে অপরকে খুব কাছে থেকে বোঝা সম্ভব হয়।
১০ বছরের ব্যবধান : অনেক ক্ষেত্রে ১০ বছর বয়সের ব্যবধানকে আদর্শ মনে করা হয় যদি দুজনের মধ্যে ভালোবাসা থাকে। যখন তারা নিজেদের জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ঠিক করে নেবে তখন এই ১০ বছরের ব্যবধান কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে এমন বয়সের ব্যবধানে স্ত্রী স্বামীর ওপরে কোন কথা বলতে পারে না। সেক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়।
২০ বছরের ব্যবধান : আপাতদৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এই বয়সের ব্যবধান আদর্শ নয়। যদিও অনেক বিখ্যাত দম্পতি আছেন যাদের বয়সের ব্যবধান ২০ বছরের বেশি। এই ব্যবধানে লক্ষ্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং মতামতের ব্যাপক পরিবর্তন হবে। সব থেকে বড় সমস্যা হতে পারে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে। বয়স্ক সঙ্গী দ্রুত সন্তান নিতে চাইবে তবে সেক্ষেত্রে বয়সে কম সঙ্গী আগ্রহী হবে না। তাদের চিন্তাধারার পার্থক্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
বয়সের ব্যবধান কতটা প্রভাব ফেলে : বয়সের ব্যবধান অনেকটাই প্রভাব ফেলে। কারণ এতে মতামতের বিশাল পার্থক্য থাকে। তবে বর্তমান বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। বিবাহ হয়ে গেছে ক্ষণস্থায়ী। সাধারণভাবে বয়সের ব্যবধান যত বেশি হয় দম্পতিরা ততো বেশি সমস্যার মুখোমুখি হয়। এজন্য বয়সের ব্যবধান কম হলেই তাকে আদর্শ ধরা হয়।